Banglar Chokh | বাংলার চোখ

অবরোধে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে  এ পর্যন্ত ১০০ জন নিহত হয়েছে

রাজনীতি

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২০:৫৬, ৪ আগস্ট ২০২৪

আপডেট: ০৪:৩৪, ৫ আগস্ট ২০২৪

সর্বশেষ

অবরোধে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে  এ পর্যন্ত ১০০ জন নিহত হয়েছে

ছবি:সংগৃহীত

দেশব্যাপী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচিতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত রাজধানীতে ১০ জনসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় অন্তত ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকার বাইরে ১৯ জেলায় পুলিশসহ অন্তত ৯১ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে বেশির ভাগই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের গুলিতে নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই হলেন শিক্ষার্থী। এছাড়া ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীও আন্দোলনকারীদের হামলায় নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে সিরাজগঞ্জে ১৩ পুলিশসহ ২৩, লক্ষ্মীপুরে ১০, ফেনীতে ৮, নরসিংদীতে ৬, কিশোরগঞ্জে ৪, মুন্সীগঞ্জে ৪, রংপুরে ৫, সিলেটে ৬, মাগুরায় ৪, পাবনায় ৩, বগুড়ায় ৪, কুমিল্লায় ৪, বরিশালে ২, শেরপুরে ২, ভোলায় ১, জয়পুরহাটে ১, সাভারে ১, হবিগঞ্জে ১, কক্সবাজারে ১ জন, কেরানীগঞ্জ ১ জন রয়েছেন। 


ঢাকায় নিহত ১০, গুলিবিদ্ধ হয়ে শতাধিক ঢামেকে
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ চলছে। এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে একজন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি উত্তরার রাজলক্ষ্মী এলাকার লতিফ এম্পোরিয়াম মার্কেট সংলগ্ন এলাকায় মারা যান। তার মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি বলেন, আনোয়ারুল ইসলাম উত্তরা এলাকায় আওয়ামী লীগের অবস্থান কর্মসূচি ছিলেন। এদিকে কেরানীগঞ্জে একজন এবং সাভারে একজন মারা গেছেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, আজ বিকেল ৩টা পর্যন্ত রাজধানীর শাহবাগ, শনির আখড়া, নয়াবাজার, ধানমণ্ডি, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, পল্টন, প্রেসক্লাব এবং মুন্সীগঞ্জ থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ১১১ জনকে এখানে আনা হয়। এর মধ্যে ৩৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
দুপুরে রাজধানীর জিগাতলা এলাকায় সংঘর্ষের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী (২৩) নামে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি রাজধানীর হাবিবুল্লাহ বাহার ডিগ্রি কলেজে পড়ালেখা করতেন। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বিকেল পৌনে ৪টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে চিকিৎসকেরা জানান, তাকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তার বাবার নাম আবু বকর বলে জহির ইসলাম নামে একজন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। 
বিকেলে ফার্মগেট এলাকায় সংঘর্ষের মধ্যে আহত হয়ে তৌহিদুল ইসলাম (২২) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি মহাখালীর ডিএইট কনসালটেন্ট লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী। আহত তৌহিদুলকে বিকেল সোয়া ৫টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা তার মৃত্যুর তথ্য  নিশ্চিত করেন। তারা আরও জানান, তৌহিদুলের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছেন।

নরসিংদীতে সংঘর্ষে নিহত ৬ 
জেলার মাধবদীতে সংঘর্ষে ছয়জনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ রোববার (৪ আগস্ট) দুপুর দুইটার দিকে মাধবদী বাজার বড় মসজিদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে তিন জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন—চরদীঘলদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন শাহীন, সদর উপজেলা পরিষদের সদস্য দেলোয়ার ও আওয়ামী লীগ নেতা মনির। বাকি তিনজনের নাম-পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি। নরসিংদী সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন তথ্য গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
 

ফেনীতে ৮জন  নিহত

ফেনীতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে আটজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আজ বেলা ২টার দিকে সংঘর্ষ শুরু হয়। সকাল থেকে বিক্ষোভকারীরা অসহযোগের সমর্থনে মহিপাল এলাকায় বিক্ষোভ করছিলেন। দুপুর ২টার দিকে মহিপাল সেতুর নিচে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের কর্মীরা মিছিল নিয়ে এলে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় মুহুর্মুহু গুলি, ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। সংঘর্ষে নিহতদের নামপরিচয় জানা যায়নি। এ ছাড়া তিন গণমাধ্যমকর্মীসহ অন্তত ১০জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
 

লক্ষ্মীপুরে সংঘর্ষ, গুলি : নিহত ৮

লক্ষ্মীপুরে সংঘর্ষ ও গোলাগুলিতে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে তিনজনের মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। অন্যজনকে ঢাকায় নেওয়ার পথে মারা যায়। সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) অরূপ পাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

নিহতরা হলেন—আফনান পাটওয়ারী, কাউছার, সাব্বির ও মিরাজ। এরমধ্যে আহত অবস্থায় ঢাকা নেওয়ার পথে আফনান মারা যান। 

আরএমও অরুপ পাল বলেন, অর্ধশতাধিক আহত রোগীকে হাসপাতাল আনা হয়েছে। এরমধ্যে তিনজনকে মৃত পেয়েছি। তারা গুলিবিদ্ধ। এ ছাড়া দুপুরে আহত অবস্থায় দুজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়। ঢাকায় নেওয়ার পথে একজন মারা যায়। আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

এরপর অন্যান্য মৃত্যুর খবর আসতে থাকে। সে হিসাব রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত গিয়ে দাঁড়ায় আটে।

সিরাজগঞ্জ পুলিশসহ ২৩ জন নিহত

রায়গঞ্জ উপজেলায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে স্বেচ্ছাসেবক লীগনেতা, ইউপি চেয়ারম্যানসহ ছয়জন নিহত হয়েছেন। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় ও কয়েকটি মোটরসাইকেলে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক মানুষ। এক তথ্য বলছে, এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এদিকে, এনায়েতপুর থানায় হামলার ঘটনায় ১৩ পুলিশ সদস্য মারা গেছেন।

সংঘর্ষে চারজনের মৃত্যুর তথ্য আজ বেলা সাড়ে ৩টায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আমিমুল ইহসান। আমিমুল ইহসান বলেন, গুরুতর আহত অবস্থায় আওয়ামী লীগের ১৫থেকে ২০ জন নেতাকর্মীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চারজন মারা গেছেন। মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আল আমিন সরকারের মরদেহ পরিবারের লোকজন নিয়ে গেছেন। অন্য তিনজন হলেন—উপজেলার ব্রহ্মগাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম ছরওয়ার, আলম ও প্রদীপ কুমার।

এরপর আরও পাঁচজনের তথ্য পাওয়া গেলেও নামপরিচয় জানা যায়নি।

আর রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি কার্যালায় নিশ্চিত করেছে, সেখানে এনায়পুর থানায় হামলার ঘটনায় ১৩ পুলিশ নিহত হয়েছেন। যদিও সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) হান্নান মিয়া এনটিভি অনলাইনকে বলেন, এনায়েতপুর থানায় আগুনের ঘটনা ঘটেছে। থানা থেকে ১২ পুলিশ সদস্যের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। তবে, এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। 

মুন্সীগঞ্জে ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ৩

আজ সকালে পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী মুন্সীগঞ্জ শহরের সুপার মার্কেট ও কৃষি ব্যাংক মোড় এলাকায় জড়ো হতে থাকেন আন্দোলনকারীরা। পরে সকাল ১০টার দিকে পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ বাঁধে। এতে সুপার মার্কেট থেকে কৃষি ব্যাংক এলাকাজুড়ে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় কাজে যাওয়ার পথে দুজন নির্মাণ শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। এ ছাড়া আরও একজনের মৃত্যুর তথ্য মিলেছে। এই ত্রিমুখী সংঘর্ষে সাতজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে।

গুলিবিদ্ধ হয়ে দুই নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবু হেনা মোহাম্মদ জামাল। তিনি জানান, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাদের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পর্যবেক্ষণ করে তাদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

বগুড়ায় নিহত ৪

বগুড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। দুপুরে এ ঘটনা ঘটেছে। তিনজনের মরদেহ শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। নিহতের মধ্যে একজনের নাম মনিরুল ইসলাম (২২)। তার বাড়ি কাহালু উপজেলায়। তিনজনের মৃত্যুর বিষয় নিশ্চিত করেছেন শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের উপপরিচালক আবদুল ওয়াদুদ। তিনি বলেছেন, শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেলে তিনজন মারা গেছেন। অনেকে আহত রয়েছেন। যদিও বগুড়ার পুলিশ সুপার জাকির হাসান গণমাধ্যমে বলেছেন, ‘কেউ মারা গেছে কি না জানি না। আন্দোলনকারীরা থানায় হামলা করছে। তারা পুলিশের ওপর হামলা চালাচ্ছে। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাজ করছে।

এরপর আরও একজনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। তার নামপরিচয় জানা যায়নি।

মাগুরায় নিহত ৪

জেলা শহরে দফায় দফায় সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মেহেদী হাসান রাব্বিসহ চারজন নিহত হয়েছেন।  পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মশিউদ্দৌলা রেজা তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এতে অর্ধশত আহত হয়েছে। নিহত অন্যদের মধ্যে আছেন, মাগুরা শ্রীপুর উপজেলার রায়নগর গ্রামের ফরাদ হোসেন এবং মোহাম্মদপুরের বালিদিয়ার সুমন আহমেদ। এরপর আরও একজন মারা গেছেন।

ভোলায় সংঘর্ষে নিহত ৩

ভোলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে অসহযোগ আন্দোলন চলাকালে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও পুলিশের সংঘর্ষে আজ রোববার তিনজন নিহত হয়েছেন। সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত সংঘর্ষে পুলিশসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন।

বিএনপির দাবি, তাদের দুই কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। এদিকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দাবি, তাদের এক যুবলীগ কর্মীকে বিক্ষোভকারীরা পিটিয়ে হত্যা করেছে। সদর হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাসপাতালে পুলিশ সদস্য জহিরুল ইসলামসহ ১৫ জন ভর্তি হয়েছেন।জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুল কাদের মজনু বলেন, বিক্ষোভকারীরা যুবলীগের কর্মী মো. মিলনকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রাইসুল আলম বলেন, পুলিশের গুলিতে ও আওয়ামী লীগের হামলায় তাঁদের দুজন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছেন।

রংপুরে কাউন্সিলরসহ নিহত ৪

নগরীতে সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১০ জন। সিটির ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মাহমুদুর রহমান টিটু জানান, নিহতের একজন রংপুর সিটি করপোরেশেনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও পরশুরাম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তার নাম হারাধন রায়।

পাবনায় নিহত ৩

পাবনায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ চলাকালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তিন শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়।  এ ছাড়া বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরে শিক্ষার্থীরা পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহরের আব্দুল হামিদ সড়কের জেবি মোড়ে অবস্থান নিয়ে নানা স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের সমাবেশে পেছন থেকে অতর্কিত গুলি চালানো হয়। এ ঘটনায় শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম (১৯), মাহবুবুল হোসেন (১৬) ও ফাহিম (১৭) নিহত হন।

কুমিল্লায় বাসচালকসহ নিহত ৩

কুমিল্লার দেবিদ্বারে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। দুপুর ১টার দিকে উপজেলার নিউমার্কেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তিনি বাসচালক বলে জানা গেছে। অপরদিকে, দাউদকান্দি ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের এরশাদ মিয়া নামে এক সদস্য নিহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা অঞ্চলের সুপার খায়রুল আলম। এ ছড়া আরও একজনের মৃত্যু সংবাদ পাওয়া গেছে, তবে নামপরিচয় জানা যায়নি।

বরিশালে আওয়ামী লীগ নেতা নিহত

বরিশালে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার তথ্য মিলেছে। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. এ এস এম সায়েম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে কোন ঘটনায় তার মৃত্যু হয়েছে, তা তিনি জানাননি। বলেছেন, ওই নেতার মাথায় ধারাল অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। রক্তক্ষরণ ও মাথায় আঘাতের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। নিহতের নাম টুটুল চৌধুরী। ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক শেখ দিপু জানিয়েছেন, টুটুল বরিশাল মহানগরের ১২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি।

সিলেটে গুলিতে নিহত ৫

সিলেটের গোলাপগঞ্জে পুলিশ-বিজিবি-বিক্ষোভকারী সংঘর্ষের সময় গুলিতে দুজন নিহত হয়েছেন। তবে, পুলিশ বিষয়টি নিশ্চিত করেনি। বেলা আড়াইটার দিকে গোলাপগঞ্জ পৌরশহরের ধারাবহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে আরও তিনজনের নিহতের তথ্য পাওয়া গেছে।

নিহত দুজন হলেন—ধারাবহর গ্রামের মো. মকবুল আলীর ছেলে ব্যবসায়ী তাজ উদ্দিন (৪৩) ও উপজেলার শিলঘাটের বাসিন্দা সানি আহমদ (১৮)। তাদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোলাপগঞ্জ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. শাহিন আহমদ।

জয়পুরহাটে নিহত ১, সংসদ সদস্যসহ আহত শতাধিক

জয়পুরহাটে সংসদ সদস্যসহ শতাধিক আহত হয়েছেন, নিহত হয়েছেন একজন। এ ছাড়া জেলা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও ছররা গুলি ছোড়ে। জয়পুরহাট ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক এস এম গালিব আনোয়ার গণমাধ্যমে জানান, দুপুর ১২টার পর থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত ৬৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে তিনজন গুলিবিদ্ধ। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে জয়পুরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য সামছুল আলম, আওয়ামী লীগ নেতা ও বিক্ষোভকারীরা আছেন।

জানা গেছে, গুলিতে মেহেদী হাসান নামে একজন নিহত হন। হামলা ও সংঘর্ষে স্থানীয় সংসদ সদস্য সামছুল আলম দুদুসহ শতাধিক আহত হয়েছেন। 

জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ নূরে আলম বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তৎপর আছেন।

 উল্লেখ্য, সরকার পতনের এক দফা দাবিতে আজ রোববার থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা অনির্দিষ্টকালের জন্য সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন শুরু হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিক্ষোভ সমাবেশে অসহযোগ আন্দোলনের রূপরেখা তুলে ধরেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ।

 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়