Banglar Chokh | বাংলার চোখ

বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, দুর্ভোগ চরমে: কোন কোন এলাকায় পানি বাড়ছে

জাতীয়

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০২:৪৬, ২৩ জুন ২০২৪

সর্বশেষ

বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, দুর্ভোগ চরমে: কোন কোন এলাকায় পানি বাড়ছে

ছবি:সংগৃহীত

 এবারের  হঠাৎ করে বন্যায় দেশে উত্তর-পূর্ব জেলা গুলোতে ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। বন্যা কবিলিত এলাকায় মানুষ অনাহরে অর্ধাহারে দিন পার  করছে। বিশুদ্ধ পানির হা হা কার চলছে। গবাদিপশুর খাবারের অভাব। কোন কোন জেলাতে পানি কমে গেলেও ঘরদুয়ার ভেসে যাওয়াতে আশ্রয় গ্রহনকারীরা ঘরে ফিরতে চাইছে না। এছাড়া প্রয়োজনীয় খাবারের অভাবে বন্যায়পীড়িত মানুষ পর্যপ্ত খাবার ও বিশুদ্ধ পানি পাচ্ছে না।
 
সুনামগঞ্জে এবারের বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জেলা সদরসহ ছাতক, দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভরপুর, শান্তিগঞ্জ, মধ্যনগর উপজেলার রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, পুকুর, মৎস্য, সবজি, আউশ ধানের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। একদিকে নদ-নদী ও বাড়িঘর থেকে পানি নিচে নামছে, অন্যদিকে বন্যার ক্ষত ভেসে উঠছে। গত বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বন্যার পানি কমছে এবং আকাশে রোদের দেখা মিলেছে। তবে, বাসাবাড়ি, রাস্তাঘাটে দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। জানা যায়, বন্যায় এলজিইডি’র প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কিলোমিটার সড়ক পানির নিচে রয়েছে। কয়েকটি সড়ক ইতিমধ্যে ওয়াস আউট হয়ে গেছে। পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে ১৭শ’ হেক্টর আউশ ধান ও ৫৬৭ হেক্টর সবজি। ৩ হাজার ৬১১টি পুকুর ভেঙে মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। এতে প্রায় ৩০ কোটি টাকার মৎস্য সম্পদের ক্ষতি হয়েছে।
 
এ ছাড়া প্রায় ৩৯ লাখ টাকার পশুখাদ্যের ক্ষতি হয়েছে। জেলার প্রায় ১৭শ’ হেক্টর আউশ ধান পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। আগামী ৩-৪ দিনের মধ্যে পানি সরে গেলে ডুবে যাওয়া সব ধান নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা পেতে পারে। তিনি আরও বলেন, গ্রীষ্মকালীন ৫৬৭ হেক্টর সবজি পানিতে তলিয়ে গেছে। 

 

বড়লেখায় বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল, আশ্রয়কেন্দ্রে বাড়ছে মানুষ
 
মৌলভীবাজারের বড়লেখায় বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে। তবে বৃষ্টি না হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন। এদিকে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে বানভাসি মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। কারণ বন্যায় কারও ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কারও ঘরে পানি উঠেছে। এই অবস্থায় ঘরে টিকতে না পেরে তারা বাধ্য হয়ে ঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। কেউ আবার আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে উঠেছেন। এতে জনভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। প্রশাসনের দেয়া তথ্যমতে, উপজেলার ৩৩টি আশ্রয়কেন্দ্রে সাড়ে চার শতাধিক পরিবার উঠেছে। এসব কেন্দ্রে প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার ও চাল বিতরণ করা হচ্ছে।

 এছাড়া বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত আছে। যদিও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন বন্যা কবলিত এলাকার লোকজন। 
 অনেক আশ্রয়কেন্দ্রের সামনেও পানি রয়েছে। কোনো কোনো কেন্দ্রে মানুষ গাদাগাদি হয়ে থাকছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো চাল ও শুকনো খাবার দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের পক্ষ থেকে তাদের খাদ্যসামগ্রী দেয়া হচ্ছে। তবে তা চাহিদার তুলনায় কম বলে বন্যার্তরা জানিয়েছেন। নিম্নাঞ্চলের অনেক বন্যাকবলিত মানুষজন কোনো ধরনের সহায়তা পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন। ফলে তারা তাদের অসহায়ত্বের কথা কাউকে বলতেও পারছেন না। এমনকি কেউ তাদের কোনো খোঁজ-খবরও  নিচ্ছেন না।  

গাইবান্ধায়  নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত

গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে গাইবান্ধার সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে জেলার ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট ও করতোয়া নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও এখনো বিপদসীমার নিচে রয়েছে। গত ২১ ঘণ্টায় এ নদীর পানি ৪৩ সে.মি. বৃদ্ধি পেয়ে গতকাল বিকাল ৩টা পর্যন্ত বিপদসীমার ৫৩ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হয় বলে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কন্ট্রোল রুম সুত্রে জানা গেছে। অপরদিকে পানি বৃদ্ধির কারণে গাইবান্ধা সদর উপজেলার মোল্লারচর, গিদারি, ঘাগোয়া, কামারজানি, ও ফুলছড়ি উপজেলার এরেন্ডাবাড়ি, ফুলছড়ি ও ফজলুপুর এবং সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর, কাপাসিয়া ও হরিপুর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সদরের মোল্লার চর ও ফুলছড়ির ফজলুপুর ইউনিয়নের নতুন নতুন এলাকায় পানি উঠে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে স্বল্পমেয়াদি বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। তবে সার্বিক পরিস্থিতির উপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা হচ্ছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, নদী বেষ্টিত যে যেসব ইউনিয়ন রয়েছে। সেইসব ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ প্রত্যেক সদস্যদের বলে দেয়া হয়েছে নদীর পাড়ে পার্শ্ববর্তী যেসব ওয়ার্ড রয়েছে সেখানে গ্রুপভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবীদের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখার জন্য।

  

সর্বশেষ

জনপ্রিয়