.
খাদ্যর নতুন সচিবের নানা উদ্যোগের ফলে সিন্ডিকেট মুক্ত হয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর। নতুন নীতিমালা প্রণয়ণের ফলে একচেটিয়া অসাধু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ব কমে এসেছে। বর্তমান খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মাকসুদুল হাসান ও খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ আব্দুল খালেক দায়িত্ব নেওয়ার পর খাদ্য মন্ত্রণালয় ও খাদ্য অধিদপ্তরের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন নতুন সচিবের নানা উদ্যোগের ফলে দীর্ঘদিন পর সিন্ডিকেট মুক্ত হলো নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা মহানগরসহ অন্যান্য জেলার বেসরকারি ময়দার মিলের গম বরাদ্দ। ২০২২ সালের পর এই প্রথম বেসরকারি ময়দার মিলে সরকারি গম বরাদ্দ নীতিমালা ২০২২ (সংশোধিত) কার্যকর হয়েছে।
গত ৩ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে খাদ্য সচিব হিসেবে যোগদান করেন মোঃ মাকসুদুল হাসান। যোগদানের পরই সরকারি নীতিমালা অনুসরণ করে তিনি বেসরকারি ময়দার মিলের সরকারি গম বরাদ্দ এবং চাল, আটা বিক্রিও অনুমোদন প্রদান করেন। একইসঙ্গে ইতিপূর্বে জারিকৃত সকল পরিপত্র বাতিল করে নীতিমালা অনুযায়ী ঢাকা মহানগরসহ অন্যান্য জেলায় তালিকাভুক্ত ময়দার মিলগুলোকে গম বরাদ্দের আদেশ জারি করেন। খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ আব্দুল খালেক গত ৩১ অক্টোবর সচিবের জারিকৃত চিঠি সকল জেলায় প্রেরণ করেছেন। সাবেক খাদ্য সচিব ইসমাইল হোসেন ২৭ সেপ্টেম্বও ২০২২ সালে বেসরকারি ময়দার মিলে সরকারি গম বরাদ্দ নীতিমালা ২০২২ প্রণয়ন করেছিলেন। উক্ত নীতিমালার ৩.১ ধারাতে বলা হয়েছে-ঢাকা মহানগরীতে অবস্থিত তালিকাভুক্ত ও স্বাস্থ্য সম্মত উপায়ে গম থেকে আটা উৎপাদনে সক্ষম ময়দার মিলের অনুকূলে প্রধান নিয়ন্ত্রক ঢাকা রেশনিং এর প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিত খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক গম বরাদ্দ করবেন। ৩.৫ ধারাতে বলা হয়েছে-স্ব স্ব জেলার তালিকাভুক্ত মিলসমূহকে গম বরাদ্দ দেওয়া হবে। যদি কোন জেলায় মিল না থাকে তবে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক পার্শ্ববর্তী জেলার ময়দার মিলকে গম বরাদ্দের প্রস্তাব মহাপরিচালক খাদ্য অধিদপ্তরে প্রেরণ করবেন। কিন্তু নীতি মালার এসব ধারার তোয়াক্কা না করে ঢাকা মহানগর ও অন্যান্য জেলায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক মিল থাকা সত্ত্বেও নারায়ণগঞ্জ জেলার মিলগুলো অন্যায়ভাবে গম বরাদ্দ করে আসছিল। এসব মিলগুলো চুক্তি করে আওয়ামী দোসররা পরিচালনা করত। আর এই দুষ্টচক্রকে সর্মথন ও সহযোগিতা করতেন সাবেক এমপি শামীম ওসমান ও তার দোসর ব্যবসায়ী সোহাগ। যিনি ছিলেন সরাসরি শামীম ওসমানের সহযোগী ও বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদের উপর হামলাকারী। সোহাগের প্রভাবে খাদ্য অধিদপ্তরে অন্য কোন ব্যবসায়ী,মিল মালিক প্রবেশ করতে পারতেন না। এখানে উল্লেখ্য যে,সাবেক সচিব নিজে নীতিমালা প্রণয়ন করেও নীতি বহির্ভুত কাজ করে গিয়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে-সাবেক খাদ্য সচিব বিপুল পরিমাণ আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করে নারায়ণগঞ্জের মিল মালিকদের অনৈতিকভাবে গম বরাদ্দের সুযোগ করে দিয়েছিলেন। যা নীতিমালা পরিপন্থি ও বেআইনি কাজ ছিল। সাবেক খাদ্য সচিবের এমন কর্মকান্ডে অন্যান্য মিল মালিকরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর সাবেক খাদ্য সচিব ইসমাইল হোসেন এনডিসি ও শামীম ওসমানের সহযোগী ব্যবসায়ীরা মিলে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসেও গম বরাদ্দ দিয়েছেন। দুর্নীতিসহ নানা অপকর্মের কারণে খাদ্য সচিব ইসমাইল হোসেনকে সম্প্রতি অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। সাবেক খাদ্য সচিবের অব্যাহতিতে সাধারণ বেসরকারি মিল মালিকরা খুশি ও সন্তুষ্ট। বেসরকারি মিল মালিকরা নতুন নীতিমালারও প্রশংসা করেন। তারা বলেন, নতুন নীতিমালা অনুসরণ করলে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবেন।