Banglar Chokh | বাংলার চোখ

বিদেশি মদদে অস্থিতিশীল পাহাড়, দেশের অখণ্ডতা রক্ষায় ৭ দফা দাবি 

মহানগর

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২৩:৩৬, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সর্বশেষ

বিদেশি মদদে অস্থিতিশীল পাহাড়, দেশের অখণ্ডতা রক্ষায় ৭ দফা দাবি 

ছবি:সংগৃহীত

পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করতে দেশবিরোধী উপজাতি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ও দেশের অখণ্ডতা রক্ষায় সাত দফা দাবি জানিয়েছে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ‘স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি’ নামের একটি প্লাটফর্ম।

শুক্রবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।

পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ থেকে আলাদা করে ‘তথাকথিত স্বাধীন’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে আমেরিকা ও ভারতের যৌথ মদদে পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্থিতিশীল করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তারা।

সমাবেশে ‘‘স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি’’ আহ্বায়ক মুহম্মদ জিয়াউল হক বলেন, ‘ভারত সময়ে-অসময়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছে, এখনো করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। ফলে ভারতের প্রতি বাংলাদেশের জনগণের একধরণের ঘৃণা তৈরি হয়েছে এবং সাম্প্রতিক সময়ে ভারতীয় সেসব অবৈধ হস্তক্ষেপকে বাংলাদেশের জনগণ কীভাবে প্রতিহত করেছে সেটা আমেরিকার বুঝা উচিত। আদিবাসী ও জুম্ম প্রচারণা, পার্বত্য বাঙ্গালীদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়িয়ে সেটেলার বনানো, সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে উপজাতিদের উস্কে দেওয়াসহ পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে আমেরিকাও যদি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বন্ধ না করে তাহলে আমেরিকার প্রতিও বাংলাদেশের জনগণের ঘৃণা তৈরি হবে যেটা দক্ষিণ এশিয়ায় আমেরিকার জন্য সুখকর হবে না।’

এসময় সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট শেখ ওমর বলেন, ‘ছাত্র-শ্রমিক-জনতার রক্তাক্ত গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে শক্তিশালী বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠনের যে অনন্য সুযোগ তৈরি হয়েছে, সেটাকে নস্যাৎ করার জন্য দেশি- বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে তাদের পুরোনো চক্রান্ত বাস্তবায়নে আবার নতুন করে মাঠে নেমেছে। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে বসবাসরত চাকমা ও ত্রিপুরা নেতারা বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে হস্তক্ষেপ করতে মোদির কাছে চিঠি লিখেছে।’

সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী বলেন, ‘সাম্প্রতিক উত্তপ্ত পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশে মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হেলেন লাফেভ তথাকথিত আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রতি তাদের সমর্থন ঘোষণা করেছে। তাছাড়া তারা আদিবাসী সম্প্রদায়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং জাতীয় পরিচয়ে তাদের অমূল্য অবদানকে স্বীকৃতি দিয়েছে। সুতরাং, বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামকে ঘিরে মার্কিন-ভারতের ষড়যন্ত্র খুবই স্পষ্ট। পার্বত্য চট্টগ্রামকে ঘিরে মার্কিন-ভারতের ষড়যন্ত্র-সহ সকল দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র সেসবকে বাংলাদেশের মুক্তিকামী ছাত্র-শ্রমিক-জনতা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে রুখে দাঁড়াবে।’

এসময় তারা পার্বত্য চট্টগ্রামের নিয়ে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র রুখতে এবং বাংলাদেশের অখণ্ডতা রক্ষায় সাত দফা দাবি জানান। দাবিগুলো হলো

এক. বাংলাদেশের উপজাতিদের সম্বোধনের ক্ষেত্রে আদিবাসী ও জুম্ম শব্দ ব্যবহার এবং বাংলাদেশের বাঙালিদের সম্বোধনে সেটেলার শব্দ ব্যবহারকে রাষ্ট্রদ্রোহিতা ঘোষণা করতে হবে। ব্যক্তি, এনজিও, মিশনারী কিংবা প্রতিষ্ঠান যারাই উপরোক্ত শব্দ ব্যবহার করবে তাদেরকে কালো তালিকাভুক্ত করে এদের বিরুদ্ধে শাস্তিযোগ্য আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। কোনো বিদেশি ওইসব শব্দ ব্যবহার করলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে শক্তভাবে তার প্রতিবাদ জানাতে হবে এবং রাষ্ট্রের অভন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ আখ্যা দিয়ে আন্তর্জাতিক আইন ও নীতমালা অনুয়ায়ী তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।

দুই. বাংলাদেশের অখণ্ডতা রক্ষায় পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের সব অঞ্চলে অবশ্যই পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি-১৯০০ বাতিল করতে হবে। জন্য একই আইন প্রচলন ও কার্যকর করতে হবে।

তিন. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারী চাকুরিতে উপজাতি কোটা বাতিল করতে হবে। পাহাড়ের বাঙ্গালীদের বাদ দিয়ে উপজাতিদের জন্য কোটা রাখা মারাত্মক রকমের বৈষম্য। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ফসল নতুন বাংলাদেশে উপজাতি কোটা সম্পূর্ণ বাতিল করতে হবে।

চার. ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্রাটেজিতে প্রবেশ করিয়ে বাংলাদেশকে ভারত-আমেরিকা বনাম চীন দ্বন্দ্বের প্রক্সি স্টেট বা বলির পাঠা বানিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামকে আরও বেশি অস্থিতিশীলতা ও ঝুঁকির মুখে ফেলে দেওয়া যাবে না। ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্রাটেজির ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে অবশ্যই নিরপেক্ষ ও ভারসাম্যমূলক ভূমিকা পালন করতে হবে।

পাঁচ. পার্বত্য সশস্ত্র সংগঠনগুলোকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।

ছয়. পার্বত্য অঞ্চলে চলমান অস্থিতিশীলতা নিরসন, সন্ত্রাস দমন ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংখ্যাক সেনা ক্যাম্প বাড়াতে হবে।

সাত. ১৯৯৭ সালের চুক্তি অনুযায়ী উপজাতি কর্তৃক সশস্ত্র কার্যক্রম বন্ধ না করায় সংবিধানবিরোধী পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাতিল করতে হবে।

সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়