Banglar Chokh | বাংলার চোখ

লেন মেনে গাড়ি চালানো শেখালো ছাত্রসমাজ

মহানগর

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২২:২৩, ৮ আগস্ট ২০২৪

সর্বশেষ

লেন মেনে গাড়ি চালানো শেখালো ছাত্রসমাজ

ছবি:সংগৃহীত

শিক্ষার্থীদের বাঁশি, লাঠি আর হাতের ইশারায় চলছে নগরের সব যানবাহন। বাস, মাইক্রো, মোটরসাইকেল ও রিকশার জন্য লেন ভাগ করে দিয়ে তা নিয়ন্ত্রণে চলছে কাজ। আর তাতে সড়কে শৃঙ্খলা মানতে বাধ্য হচ্ছেন চলাচলকারীরা। গত তিন দিনের চিত্রে ভোগান্তি কমায় বাহবা পাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
 
শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থানায় হামলা ও সহকর্মীদের হত্যার প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতিতে গেছেন ট্রাফিক পুলিশ। থানাগুলোতেও ঝুলছে তালা। এ অবস্থায় রাজধানীর সড়কগুলোতে ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করছেন শিক্ষার্থীরা।
 

বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাজধানীর ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, মানিক মিয়া এভিনিউ, আসাদগেট, শ্যামলী, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডিসহ বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি পরিচ্ছন্নতা ও দেয়াললিখনের কাজও করছেন শিক্ষার্থীরা।

এসব এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রণে যেখানে-সেখানে থামতে পারছে না গাড়ি। উল্টো পথে চলার কোনো সুযোগ নেই। হেলমেট ছাড়া মোটরসাইকেল চলা বন্ধ। লাইন ভেঙে তাড়াহুড়ো করে সামনে যাওয়ার তাড়া নেই চালকদেরও। পথচারীরা রাস্তা পার হচ্ছেন শৃঙ্খলা মেনে। যেখানে-সেখানে দাঁড়িয়ে যাত্রীও তুলতে পারেননি বাসের হেলপাররা।

আসাদগেট মোড়ে দেখা গেল হেলমেট না থাকায় এক মোটরসাইকেল আরোহীকে এক ঘণ্টা যানজট নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব দিলেন শিক্ষার্থীরা। তিনিও হাসিমুখে বাইক রেখে নেমে গেলেন রাস্তায়।

এই বাইকার সময় সংবাদকে বলেন, ‘দোষ তো আমার। পুলিশ হলে ঘুষ দিয়ে পার পেয়ে যেতাম । শিক্ষার্থীরা যে দায়িত্ব আমাকে দিলো তাতে আমার চোখ খুলে গেছে। ভুল থেকে ভালো কিছু করার সুযোগ পেয়ে আমি খুশি। শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করলাম।’
 এসব এলাকা ঘুরে দেখা যায়, স্বেচ্ছাশ্রম  দিতে নিজ উদ্যোগে কাজ করছেন তারা। পালা করে শত শত শিক্ষার্থী সিগন্যালগুলোতে যান চলাচন নিয়ন্ত্রণ করছেন। দায়িত্বপালনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে নারী শিক্ষার্থীদের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য।

ফার্মগেট সিগন্যালে কিছু পথচারী অনেক্ষণ দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীদের যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ দেখছিলেন। তাদের মধ্যে একজন খায়রুল আলম  বলেন, আমি ঢাকার রাস্তাঘাট এত সুশৃঙ্খল আমি আগে কখনও দেখিনি। ছেলেমেয়েগুলো নিজ উদ্যোগে খেয়ে না-খেয়ে সড়ক সামলাচ্ছে। তাদের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা বেড়ে গেছে। যে কারণে সবাই ট্রাফিক আইন মেনে চলছে। যে শ্রদ্ধা পুলিশের ওপর ছিল না।

মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড ও তিন রাস্তার মোড়ে দায়িত্বপালন করতে দেখা যায় শতাধিক শিক্ষার্থীকে। মাথায় জাতীয় পতাকা, গলায় পরিচয়পত্র নিয়ে ট্রাফিক সিগন্যালে ঘাম ঝরাচ্ছেন তারা।

ইউল্যাব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মরিয়ম জামান বলেন, ‘আমরা রাষ্ট্র মেরামতের কাজে রাস্তায় আছি। যতদিন-না ট্রাফিক পুলিশ আসে আমরা রাস্তায় থাকব। তবে রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশদের কতটা কষ্ট করতে হয় সে অভিজ্ঞতা হলো।’

সর্বশেষ

জনপ্রিয়