নিজস্ব ছবি
নির্মল নীলাকাশ, অমল ধবল মেঘের ভেলা আর শুভ্র কাশবনের নাচন- এসব নিয়েই শরতের মাতামাতি। নীল আকাশের সাদা মেঘের ভেলায় চড়ে প্রকৃতিতে আগমন শুভ্র শরতের।মেঘ-রৌদ্রের লুকোচুরির মাঝে প্রকৃতিতে শরৎ নিয়ে আসে এক নৈসর্গিক মুগ্ধতা। শুভ্র শিউলির মনমাতানো ঘ্রাণ আর দিগন্ত বিস্তৃত ফসলের মাঠের নিরন্তর ঢেউয়ের দোলা সৃষ্টি করে এক নতুন দৃশ্যপট। প্রকৃতিতে চলে অপরূপ রূপের লীলাখেলা।ঋতুবৈচিত্র্যের দেশে শরতের আগমন বার্তা ইট-পাথরের নগরে বোঝার উপায় নেই। আর বোঝা গেলেও নগরজীবনের ব্যস্ততায় উৎসব আয়োজন করা হয়ে ওঠে না। তবুও কিছু আয়োজন নগরবাসীকে এখনও জানান দিয়ে যায়- ঋতুচক্রের আবর্তে প্রকৃতিতে এসেছে শরত।
শুক্রবার ০৪ অক্টোবর শ্রুতি সিলেট প্রতিষ্ঠার দুই যুগ পূর্তি উপলক্ষ্যে কবি নজরুল অডিটোরিয়ামের মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় শরৎ উৎসব। বর্ষায় স্মাত নগরবাসীর মনে এনে দেয় অপার প্রশান্তি। নীল-সাদা শাড়ি, খোঁপায়-হাতে ফুলের সাজ আর নাচে-গানে চলে শরৎবন্দনা। শরৎ উৎসবের মূল আয়োজনে পরিবেশন করা হয় গান-কবিতা-নৃত্য। ছিল 'শরৎ কথন' পর্ব। এতে ঋতুবৈচিত্র্যের দেশ বাংলাদেশের প্রকৃতির সুরক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়।
শ্রুতি সিলেটের সদস্যসচিব সুকান্ত গুপ্ত তার স্বাগত বক্তব্য রাখেন। উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক নগরপিতা আরিফুল হক চৌধুরী। শরৎ কথন পর্বে অংশ নেন শ্রুতি সমন্বয়ক সুমন্ত গুপ্ত । তারা বক্তব্যে বলেন সোনালি রোদ্দুরের ঝিলিমিলি আর রাতের জ্যোৎস্নায় মাতোয়ারা মন। নদীতীরে বনের প্রান্তে অপরূপ শোভা ছড়ায় শুভ্র কাশফুল। শরতের কাশফুলে মুগ্ধ হয় না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়াও দুস্কর। শ্রুতি সিলেট তার দীর্ঘ দুই যুগের পথ চলায় আলোরমিছিল, বর্ণমালার মিছিল,আঁধার ভেঙে আসুক, পিঠা উৎসব, বর্ষবরণ উৎসব, বর্ষা উৎসব,শরৎ উৎসব সহ নানা উৎসব আয়োজনের মাধ্যমে আবহমান বাংলার ঐতিহ্য কে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরছে এবং তাদের এই কাজে যুক্ত করছে। যা আগামীর মানবিক বাংলাদেশ গঠনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে। দ্বিতীয় পর্বে সান্ধ্য অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ।
অর্ধদিবস ব্যাপী আয়োজনে সমবেত নৃত্য,সংগীত, আবৃত্তি পরিবেশন করেন জাতীয় রবীন্দ্র সংগীত সম্মিলন পরিষদ, আনন্দলোক,গীতবিতান বাংলাদেশ, নৃত্যশৈলী, দ্বৈতস্বর,সুরেরভূবন,নৃত্যরথ,ললিত মঞ্জরি এবং একক সংগীত পরিবেশন করেন ,প্রদীপ মল্লিক,ইকবাল সাই, পল্লবী দাশ মৌ, লিংকন দাশ প্রমুখ।