ছবি:সংগৃহীত
বারানসিতে জ্ঞানবাপী মসজিদে হিন্দু মন্দিরের অস্তিত্ব নিয়ে অনেক দিন ধরেই সোচ্চার হিন্দু উগ্রবাদিরা। আদালতেও গড়িয়েছে বিষয়টি। এতে বিতর্কিত নির্দেশনাও দিয়েছে আদালত। এর পরে উত্তর প্রদেশের সন্তুলে জামা মসজিদ নিয়ে একই দাবি তোলার রাজনীতি চলছে। যার ফলে সেখানে সংঘর্ষে সম্প্রতি ৪ জনের মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে। সন্তুলে জামা মসজিদের জায়গায় হিন্দু মন্দির ছিল দাবি করে আদালতে মামলা দায়ের করেন এক ব্যক্তি। তারপরই আদালত সমীক্ষার নির্দেশ দিতেই গোলমালের সূত্রপাত। প্রথম দিন জরিপের কাজ চললেও দ্বিতীয় দিনে জরিপ শুরু হওয়ার পর প্রবল ক্ষোভ জানাতে থাকেন স্থানীয় মুসলমানরা। এক পর্যায়ে তা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ এবং পরবর্তী সময়ে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে পরিণত হয়। এখন সেখানে চলছে পুলিশের কড়া পাহারা। তবে উত্তেজনা এখনও বিরাজমান। রাজস্থানের আজমির শরিফের দরগা নিয়েও অনুরূপ বিতর্ক তুলতে মামলা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আজমির শরিফের দরগায় প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ আসেন। শুধু মুসলমানরাই নন, সব ধর্মের মানুষ প্রবল বিশ্বাস নিয়ে এখানে আসেন। এখানে রয়েছে ত্রয়োদশ শতাব্দীর সুফি সাধক খাজা মউনুদ্দিন চিশতির সমাধি। ভারত সরকারের আইনে একটি ট্রাস্টের অধীনে পরিচালিত হয় এই দরগা।
কিন্তু এই সর্ব ধর্মের মিলনক্ষেত্র নিয়েও রাজনীতি শুরু হয়েছে। গত বুধবার হিন্দু সেনা নামের একটি সংগঠনের সভাপতি বিষ্ণু গুপ্ত স্থানীয় আদালতে মামলা করেন। তার দাবি, শিব মন্দিরের উপর তৈরি হয়েছে এই দরগা। তাই এটিকে ভগবান শ্রী সংকটমোচন মহাদেব বিরাজমান মন্দির বলে ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন তিনি। এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আজমির দরগা কমিটি, ভারত সরকারের সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগকে নোটিশ জারি করেছেন দেওয়ানি আদালতের বিচারক মন মোহন চান্ডেল। মামলাটি গ্রহণ করে বিচারক আগামী ২০ ডিসেম্বর শুনানীর দিন ধার্য করেছেন।
সংবাদ সূত্রে জানা গেছে, দরগা সরিয়ে ফেলারও আর্জি জানানো হয়েছে আদালতের কাছে। একই সঙ্গে ভারত সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগকে দিয়ে জরিপ করারও আবেদন জানানো হয়েছে। আবেদনকারীর আইনজীবী শশী রঞ্জন কুমার সিং আদালতে আবেদনে জানান, দরগার প্রধান ফটকের ছাদের নকশার সঙ্গে হিন্দু মন্দিরের নকশার মিল রয়েছে।
এইভাবে আজমির শরিফ নিয়ে বিতর্ক তোলার প্রবল সমালোচনা করেছেন রাজনীতিবিদরা। কংগ্রেস এমপি কপিল সিব্বাল বৃহস্পতিবার তার এক্স হ্যান্ডেলে এই মামলার ঘটনাকে উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে লিখেছেন, রাজনৈতিক সুবিধা লাভের জন্য দেশকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।