ফাইল ছবি
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রাণীত আইন উপেক্ষা করে বহাল তবিয়তে ঢাকাসহ দেশের অধিকাংশ আইন কলেজের অধ্যক্ষবৃন্দ! জাতীয় বিশ্ববিদ্যাল প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই সংবিধান কর্তৃক প্রণীত আইন বলে "সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য বিধি/রেগুলেশন প্রণয়ন করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নির্দেশনা দিয়ে আসছে যার ব্যাতিক্রম হয় নাই দেশের আইন কলেজ সমূহ।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ইং তারিখে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ঢাকার মোহাম্মদপুরের নূরজাহান রোডের মহিলা কলেজে অনুষ্ঠিত ওয়ার্কশপে সারা দেশের আইন কলেজর অধ্যক্ষদের জন্য আয়োজিত ওয়ার্কশপে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক (ভারপ্রাপ্ত) ফাহিমা সুলতানা তার লিখিত বক্তব্যে কঠিন ভাবে উল্লেখ্য করেন যে " যে সেশনে শুধু মাত্র আইন বিষয়ের একজন শিক্ষকের বয়স ৬০ বছর পূর্ণ হবে সেই সেশনের শেষ দিন অর্থাৎ পরবর্তী জুন মাসের ৩০ তারিখে একজন শিক্ষক শিক্ষকতা হতে অবসর গ্রহণ করবেন" জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজেস্ব লিখিত বিধান মতে একজন অধ্যক্ষ /শিক্ষকের অবসরে যাওয়ার বয়সসীমা ৬০বছর । অথচ এই বিধি / আইনকে অমান্য করে ঢাকা সহ দেশের অধিকাংশ আইন কলেজের অসাধু অধ্যক্ষ যাদের বয়স অনেক পুর্বেই ৬০ বছর অতিক্রম করেছে, তারা অবৈধ ভাবে বহাল তবিয়তে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন ।
সর্বশেষ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কতৃক "জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত বেসরকারি কলেজ শিক্ষকদের চাকুরীর শর্তাবলী রেগুলেশন (সংশোধিত) ২০১৯" নামিও রেগুলেশন পাস হয় যা ২২.০৬.২০১৯ তারিখে এক্যাডেমিক কাউন্সিল সভায় সুপারিশকৃত, ২৪.০৬.২০১৯ তারিখে সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদিত এবং ২৯.০৬.২০১৯ তারিখে সিনেট সভায় অনিসমর্থিত। উক্ত রেগুলেশনের ৪(ক.১) অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে নুন্যপক্ষে দ্বিতীয় বিভাগ/শ্রেণী দেখানো হয়েছে এবং উক্ত রেগুলেশনের ১৫(ক) ধারা অনুযায়ী একজন শিক্ষকের অবসরের বয়স ৬০ বছর নির্ধারিত আছে এবং এই রেগুলেশনের কার্যকরিতা অদ্য পর্যন্ত বিদ্যমান। কিন্তু দেশের আইন কলেজ সমূহের কিছু অসাধু অধ্যক্ষকের সহযোগিতায় ও প্ররোচনায় গত ০৯ই আগস্ট ২০২৩ ইং তারিখে স্মারক নং: ০১(১৬২) জাতী: বি:/ প্রশা:/৯২/১/৪২৫ মূলে এক প্রস্তাব প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করেন যাতে শিক্ষক নিয়োগের কোনো নূন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতার কথাই বলা হয় নি এবং উক্ত প্রজ্ঞাপনের ৭.২(গ) ধারা অনুযায়ী একজন অধ্যক্ষের অবসরে যাওয়ার বয়সসীমা ৬৭ বছর দেখানো হয়েছে এবং উক্ত প্রজ্ঞাপন/ রেগুলেশন ২০২২ এর ধারা ১(খ) অনুযায়ী "এই রেগুলেশন সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদিত এবং সিনেট কর্তৃক অনুসমর্থিত হওয়ার পর কার্যকরী হবে" মর্মে উল্লেখ আছে এবং উক্ত প্রস্তাবিত রেগুলেশনের ১৪- ধারা অনুযায়ী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত বেসরকারি কলেজ শিক্ষকদের চাকুরীর শর্তাবলী রেগুলেশন (সংবিধান) ২০১৯ এ আইন কলেজ সম্পর্কিত বিধান গুলি এখন পর্যন্ত বলবত রয়েছে।
গত ৯ আগষ্ট ২০২৩ ইং তারিখের প্রজ্ঞাপনের রেগুলেশন ২০২২ এর প্রস্তাবিত ধারা ১(খ) এবং ধারা ১৪ অনুযায়ী কোনো রেগুলেশন অদ্য পর্যন্ত পাস হয় নাই। ফলে আইন কলেজ সমূহে একদিকে যেমন দূর্নীতীর আখড়ায় পরিনত হয়ে উঠছে, অপর দিকে চাকুরির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দেশের অধিকাংশ আইন কলেজের উপাধ্যক্ষ / শিক্ষক মন্ডলি ।
উল্লেখিত অনিয়ম দূর করার লক্ষ্য সরকারের বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছেন দেশের সচেতন নাগরিক সমাজ।