প্রতীকী ছবি
গত ১৯শে সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে মামুন নামের এক যুবককে হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংগঠিত সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের জেরে পার্বত্য রাঙামাটি শহরের অন্যতম প্রধান বানিজ্যিক এলাকা বনরূপা বাজারে কোনো প্রকার উষ্কানী ছাড়াই সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের সময় সহিংসতা ও অনিক নামের এক যুবককে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা পৃথক মামলায় শনিবার পর্যন্ত চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- হত্যার মামলার আসামি মো. রুবেল (২৩), আরবার (১৭), রাকিব (২৭) ও আরিফুল (১৭)। শনিবার (৫ অক্টোবর) বিকেলে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। এরআগে শুক্রবার সারাদিন জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে মো. রুবেল (২৩) এবং এক কিশোরকে (১৭) অনিক কুমার চাকমা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য দুজন রাকিব (২৭) ও আরেক কিশোরকে (১৭) অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাহেদ উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
পুলিশ জানায়, তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে পুলিশ অভিযান চালিয়ে শুক্রবার ভোর ৪টার দিকে খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলা থেকে অনিক কুমার চাকমা হত্যা মামলার আসামি মো. রুবেলকে গ্রেপ্তার করে। এদিন বিকেলে আরেক আসামি আরবারকে রাঙামাটি শহরের রিজার্ভ বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এছাড়াও অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনায় ওই দিন বিকেলে শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের দোয়েল চত্বর এলাকা থেকে রাকিবকে ও রিজার্ভ বাজার এলাকা থেকে আরিফুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর মধ্যে হত্যা মামলার আসামি রুবেলের বাড়ি শহরের চম্পকনগর এলাকায়।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাহেদ উদ্দিন বলেন, শুক্রবার ভোরে মানিকছড়ি উপজেলা থেকে হত্যা মামলার আসামি রুবেলকে গ্রেপ্তার ও বাকি তিনজনকে রাঙামাটি শহরের রিজার্ভ বাজার ও দোয়েল চত্বর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ির সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২০ সেপ্টেম্বের সংঘাত ও বৈষম্য বিরোধী পাহাড়ি ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে রাঙামাটিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে বনরূপায় গিয়ে হামলার চেষ্ঠা চালালে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। এই ঘটনার পরপর পাহাড়ি-বাঙ্গালী উভয়েই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে কালিন্দীপুর এলাকায় মিছিলে অংশগ্রহণকারী অনিক কুমার চাকমা নামের এক শিক্ষাথীকে পিটিয়ে হত্যা, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও বিভিন্ন ঘরবাড়ি দোকানপাটে, যানবাহনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন।
এ ঘটনায় গত ২১ সেপ্টেম্বর অনিক কুমার চাকমার বাবা আদর সেন চাকমা বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। এছাড়া অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনায় দুই হাজারের অধিক অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করে পুলিশ। এই দুইটি মামলায় প্রযুক্তির সহায়তায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।