Banglar Chokh | বাংলার চোখ

 ঝিনাইদহে তৈরী হচ্ছে ঘাসকাটা মেশিন মাসে বিক্রি ৩ কোটি টাকা

সারাবাংলা

আসিফ কাজল, ঝিনাইদহ

প্রকাশিত: ০১:৩৫, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

সর্বশেষ

 ঝিনাইদহে তৈরী হচ্ছে ঘাসকাটা মেশিন মাসে বিক্রি ৩ কোটি টাকা

ছবি: বাংলার চোখ

দেশি প্রযুক্তিতে চায়নার আদলে ঝিনাইদহে শতাধীক ঘাসকাটা মেশিন করখানা গড়ে উঠেছে। এসব কারখানা থেকে প্রতি মাসে তিন কোটি টাকার মেশিন বিক্রি হচ্ছে। দক্ষ শ্রমিক দিয়ে কারখানাগুলোতে তৈরী হচ্ছে বাহারী সব ঘাসকাটা মেশিন। আর এসব ফ্যাক্টরিতে কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে প্রায় তিন’শ বেকার যুবকের। কারখানা মালিকদের ভাষ্যমতে, গ্রামাঞ্চলে ক্রমেই বাড়ছে ঘাস ও খড় কাটা মেশিনের চাহিদা বড়ছে। ঘরে ঘরে মানুষ গরু ও ছাগল পালন করছেন। আর এমন চাহিদা থেকে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর বাজারে গড়ে উঠেছে অর্ধশতাধিক কারখানা। এসব কারখানা থেকে প্রতিদিন ১শ’টির বেশী মেশিন তৈরী হচ্ছে। প্রতি মাসে ৩ কোটি টাকার উপরে মেশিন বেঁচা-কেনা হচ্ছে। ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার মেইন বাসস্টান্ডে সারি সারি ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপে তৈরী হচ্ছে আধুনিক সব ঘাসকাটা মেশিন।  আগে এসব ওয়ার্কশপে শ্যালো-মেশিনের যন্ত্রাংশ, ধান ও ভুট্টা ঝাড়া মেশিন তৈরী হতো। এখন সে জায়গা দখল করে নিয়েছে গবাদিপশুর ঘাস আর খড় কাটা মেশিন। চুয়াডাঙ্গা জেলার তিতুদহ ইউনিয়নের গবরগাড়া গ্রাম থেকে রাসেল হোসেন কোটচাঁদপুরে এসেছেন ঘাসকাটার মেশিন কিনতে। তিনি জানান, প্রচলিত পদ্ধতিতে খড় ও ঘাস টুকরো করে কাটা সময় সাপেক্ষ। এতে করে খরচ বাড়ে, সময়ও বেশি লাগে, তাই মেশিন কিনতে এসেছেন। কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার ইউনিয়নের কাষ্টভাঙ্গা গ্রামের আব্দুল হাই এই বাজারে তার পুরাতন ঘাসকাটা মেশিন বিক্রি করে আবার নতুন মেশিন কিনেছেন। তিনি জানান, তার ১০/১২ টি গরু আছে, আগে বটি-ছুরি দিয়ে হাতে ঘাস কাটতেন, আর এখন মেশিনে কাটেন। তিনি অনেকের ঘাস কেটে দিয়ে বাড়তি ইনকামও করছেন। একটা মেশিনে ঘন্টায় ১শ থেকে ৩শ কেজি ঘাস বা খড় কাটা যায়। কোটচাঁদপুরের আক্তার ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের মালিক আক্তারুল আলম জানান, এখানে কাজ শিখে অনেকেই নতুন নতুন কারখানা তৈরী করছেন, তিন শতাধিক শ্রমিক এখানে কাজ করছেন। তারা ভাল বেতনও পাচ্ছেন। তিনি জানান, ৭/৮ বছর ধরে এখানে ঘাসকাটার মেশিন তৈরী হচ্ছে। ট্রান্সপোর্ট আর কুরিয়ারে সারা বাংলাদেশে এই মেশিন সরবরাহ করা হচ্ছে। ওয়ার্কশপে কাজ করা মোহাম্মদ তাজু জানান, আগে ধান ঝাড়া মেশিন, ভুট্টার হলার, ট্রলি এগুলো বেশী তৈরী হতো। তবে চাহিদা বাড়ায় এখন ঘাসকাটা মেশিন বেশী তৈরী হচ্ছে। মেকানিক মিল্টন জানান, ঘাসকাটা মেশিনের কাঁচামাল ঢাকা, যশোর, কুষ্টিয়া থেকে আনা হয়। জাহাজের ভাঙ্গা যন্ত্রাংশ নানা কাঁচামাল লাগে। আবার কোটচাঁদপুরেও কিছু কাঁচামাল তৈরী হয়। এসব দিয়েই ঘাসকাটা মেশিন তৈরী হচ্ছে। সরজমিন দেখা গেছে কোটচাঁদপুরে মামা-ভাগ্নে ওয়ার্কশপ, কায়েম ওয়ার্কশপ, ইভা ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ সহ ছোট-বড় প্রায় ৫০টি ওয়ার্কশপ রয়েছে। এছাড়া জেলার হাটগোপালপুরেও এমন কারখানা গড়ে উঠেছে। কোটচাঁদপুর মেইন বাসস্টান্ডে লোহা ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম জানান, মাসে ৩ কোটি টাকা আর বছরে ৩৬ কোটি টাকার ঘাসকাটা মেশিন বিক্রি হচ্ছে। বিদ্যুৎ চালিত একটি ঘাসকাটা মেশিনের দাম ১০ হাজার টাকা। 
 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়