ছবি:সংগৃহীত
যশোরে ঠিকানাবিহীন অবস্থায় শেল্টার হোমে থাকা সেই তিন নারীর মধ্যে বাকপ্রতিবন্ধী জিম (২৩) পরিবারের কাছে ফিরেছেন।
রোববার (১২ নভেম্বর) সকালে যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার জিমকে তার বাবা-মায়ের হাতে তুলে দেন। জিম পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার চর ঘড়ঘড়ি গ্রামের বাবু পরামানিকের মেয়ে।
৬ নভেম্বর জিমসহ তিন ‘ঠিকানাবিহীন’ নারীকে নিয়ে বাড়ি ফেরার ঠিকানা নেই তাদের’ সংবাদ প্রকাশিত হয়। বিষয়টি নজরে আসে পাবনার দীপ্ত টিভির প্রতিনিধি শামসুল আলমের। তিনি জিমের মায়ের ফুফাতো ভাই। শামসুল আলম জিমের বাবা বাবু পরামানিক ও মা তহমিনাকে নিয়ে শনিবার সন্ধ্যায় যশোরে আসেন।
রোববার সকালে যশোরের কালেক্টরেট কার্যালয়ে জেলা প্রশাসক জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার জিমকে তার বাবা-মায়ের কাছে হস্তান্তর করেন। এ সময় সেখানে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
জিমের বাবা বাবু পরামানিক ও মা তহমিনা জানান, দেড় মাস আগে সন্ধ্যায় প্রতিবেশী চাচার বাড়িতে টিভি দেখতে গিয়ে নিখোঁজ হয় জিম। এলাকায় অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান মেলেনি। দেড় মাস পর মেয়েকে ফিরে পেয়ে তারা খুবই খুশি।
জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার যশোরের প্রোগ্রাম অফিসার রিফাত রহমান রাখী জানান, ২৩ সেপ্টেম্বর ভবঘুরে অবস্থায় বাকপ্রতিবন্ধী জিমকে বেনাপোল থানার সদস্যরা উদ্ধার করেন। ওইদিনই পুলিশের কাছ থেকে জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার তাকে গ্রহণ করে যশোরে ঢাকা আহছানিয়া মিশনের শেল্টার হোমে রাখে। এরপর পারিবারিক একত্রীকরণের জন্য স্বজনদের সন্ধান করেন। কিন্তু ঠিকানা উদ্ধার না হওয়ায় তারা বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানান।
জেলা প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তা মুনা আফরিণ জানান, জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার জিমের স্বজনদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) যশোর অফিসেরও সহযোগিতা নেওয়া হয়। কিন্তু পরিচয় উদঘাটন কিংবা স্বজনদের সন্ধান না পাওয়ায় তাকে গাজীপুরে সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানোর সুপারিশ করা হয়। এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে সেটি জিমের স্বজনদের নজরে আসে। এরপর তারা মুনা আফরিণের সঙ্গে যোগযোগ করেন। বিষয়টি তিনি জেলা প্রশাসককে জানান। জিমের বাবা মা যশোরে এলে রোববার সকালে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার জিমকে তাদের কাছে হস্তান্তর করেন। একই সঙ্গে উপহারসামগ্রী দিয়ে যাতায়াতের ব্যয়ভার বহন করেন।
যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার বলেন, পরিচয় উদঘাটন না হওয়ায় জিমসহ তিন নারীকে সরকারি শেল্টার হোমে পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এরই মধ্যে সংবাদ প্রকাশের পর জিমের বাবা মা তাকে শনাক্ত করেন এবং যোগাযোগ করেন। এরপর জিমকে বাবা মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
হাছান মজুমদার আরও বলেন, পরিবারের চেয়ে ভালো আশ্রয়স্থল আর কোথাও হতে পারে না। জিমকে তার বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিতে পেরে খুব ভালো লাগছে। শেল্টার হোমে পরিচয়হীন আরও দুজন প্রতিবন্ধী নারী আছে। পরিচয় উদঘাটন বা স্বজনদের সন্ধান পাওয়া গেলে তাদেরও পরিবারে হস্তান্তর করা হবে।