ছবি:সংগৃহীত
অর্ধ কোটি টাকা ঘুষ দিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী প্রশাসন পদ বাগানোর অভিযোগ নির্বাহী প্রকৌশলী প্রশাসন মো. আবু হানিফ মৃধার বিরুদ্ধে। আগষ্ট বিপ্লবের পর নিজেকে বিএনপির নেতা পরিচয় দিয়ে বাগিয়ে নিচ্ছেন বিভিন্ন সুবিধা।
এ ছাড়া রয়েছে মন্ত্রনালয়ে যেয়ে দফতর বিরোধী বিভিন্ন অনৈতিক তদবির করার অভিযোগ। ওয়েটিং লিস্ট থেকে চাকরি দেয়ার নামে তিন’শ জনের কাছ থেকে ত্রিশ কোটি টাকা ঘুষ গ্রহন করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বদলির ভয় দেখিয়ে এখন ঘুষ আদায় করেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন অধীনস্থ কর্মচারীরা। আদালতের রায় অবমাননাসহ বিভিন্ন কর্মকর্তার নামে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে যুগ্মসচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিবের কান ভারি করাই তার প্রধান কাজ। এলজিইডি প্রশাসনের দায়িত্ব প্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী আবু হানিফ মৃর্ধা কোটি টাকার ঘুষ ও মাসে দু’লাখ টাকা দেওয়ার চুক্তিতে নির্বাহী প্রকৌশলী প্রশাসন পদ বাগিয়েছেন। বিষয়টি ওপেন সিক্রেট। আর তিনি ওয়েটিং লিস্ট থেকে চাকরি দেয়ার নামে ত্রিশ কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন সেটিও ওপেন সিক্রেট। আর আদালতের রায় কার্যকর না করে তালবাহানা, মন্ত্রণালয়ে সচিব,পিএস সহ সংশ্লিষ্টদের নিকট দফতরের ও দফতরের ভিবিন্ন কর্মকর্তা নামে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা এবং বদলির ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিকট থেকে ঘুষ আদায় এখন তার প্রধান কাজ্। গড়েছেন অবৈধ সম্পদের পাহাড়। গাড়ী, বাড়ি ফ্লাট, প্লট আর জমির সামরাজ্য গড়া’সহ বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে নির্বাহী প্রকৌশলী প্রশাসন মো. আবু হানিফ মৃধার বিরুদ্ধে।
এলজিইডির আতঙ্কের নাম আবু হানিফ মৃধা। জানা গেছে, নির্বাহী প্রকৌশলী প্রশাসন মো. অবু হানিফ মৃধা বর্তমান প্রধান প্রকৌশলীর খুবই আস্থাভাজন কর্মকর্তা। এই হানিফের পরামর্শের বাহিরে একচুলও নড়েননা প্রধান প্রকৌশলী। শুধু তাই নয় গত পাঁচ আগষ্টের পর নানা ভাবে এলজিইডি অস্থিতিশীল করার পায়তারায় লিপ্ত এই হানিফ মৃধা। ২০২৩ সালের নভেম্বরে নির্বাহী প্রকৌশলী প্রশাসন পদে যোগদানের পর থেকেই প্রধান প্রকৌশলীর পর দ্বিতীয় ক্ষমতাধর কর্মকর্তা হিসাবে আবির্ভূত হন হানিফ মৃধা। তাকে মন্ত্রনালয়ে যোগাযোগের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এযেন শক্তির উপর মহা শক্তি।
অভিযোগে প্রকাশ, সাবেক দুর্নীতিবাজ মন্ত্রী তাজুল ইসলাম তার এপিএস আর এক দুর্নীতিবাজ জাহিদ চৌধুরীর, সচিব ও পিএস এর সাথে সখ্যতা গড়ে তোলার ফলে তাদের স্পাইয়ের দায়িত্ব পালন করেন হানিফ মৃধা।
এছাড়া পিডি নিয়োগ, নির্বাহী প্রকৌশলীর পোস্টিং, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর পোস্টিং পেতে কোথায় পোস্টিং পেতে কি পরিমান টাকা লাগে তার পরিমান বলে দিতেন এই হানিফ মৃধা। নির্বাহী প্রকৌশলীর পোস্টিং পেতে জেলার গুরুত্ব অনুসারে ৫০ লাখ থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত উৎকোচ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
পিডি নিয়োগের রেট হত প্রকল্পের মোট বরাদ্দের ওপর। এর পরিমান ৫০ লাখ থেকে কয়েক কোটি টাকা পর্যন্ত। বর্তমান অবদি পিডি নিয়োগে সর্বাধিক ঘুষের রেট উঠেছে তিন কোটি টাকা। আর ঘুষের গোপন চুক্তি হয় হানিফের সাথে। হানিফ মৃধা গ্রীণ সিগনাল দিলে মন্ত্রণালয় নির্বাহী প্রকৌশলী, পিডি ও অন্যান্য পদে পোস্টিং-এ কর্মকর্তার নাম প্রস্তাব করেন প্রধান প্রকৌশলীর নিকট সেভাবেই প্রশাসন শাখা বদলির আদেশ জারি করে।
এসব খাত থেকে হানিফ মৃধা একটি ভাগ পায়। সূত্র আরো জানায় হানিফ মৃধা উপজেলা প্রকৌশলী, সহকারী প্রকৌশলী, সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী, হিসাবরক্ষক দের কাছে ফোন দিয়ে বদলির ভয় দেখাত ওই কর্মকর্তা কর্মচারীরা বললি ঠেকাতে তাঁর সাথে যোগাযোগ করে ঘুষের টাকা পাঠাত এবং তাকে খুশি রাখতে মাসে মাসে টাকা পাঠায়।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায় হানিফ মৃধা সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলামের এপিএস জাহিদ চৌধুরীর মাধ্যমে মন্ত্রীকে ৫০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী প্রশাসন পদ বাগিয়েনেন।শুধু তাই নয় প্রতি মাসে দু’ লাখ টাকা ঘুষ দেয়ার চুক্তি হয়। সূত্র আরও জানায় হানিফ মৃধা প্রতি মাসে প্রধান প্রকৌশলীর নামে জেলার নির্বাহী প্রকৌশলীদের নিকট থেকে দশ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা ও পিডিদের নিকট থেকেও ওই পরিমান টাকা উঠায়। এভাবে মাসে কোটি টাকার উপরে ঘুষের টাকা উঠায়।
অন্তর্বর্তী সরকারের সময় মন্ত্রনালয়ে ঘুষের টাকা দিতে হয় না এবং নির্বাহী প্রকৌশলী ও পিডিদের নিকট থেকেও ঘুষের টাকা উঠানো খুব কমে গেছে। সূত্র জানায় এই হানিফ মৃধা সাবেক প্রধান প্রকৌশলী খলিলুর রহমানের সময় সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী প্রশাসন পদে নিয়োগ পান, ওই পদে ছিলনা সাবেক আর এক প্রধান প্রকৌশলী আবদুর রশিদ খানের প্রথম দুই মাস পর্যন্ত। ওই সময় হানিফ মৃধা ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা কামিয়ে নেন।