Banglar Chokh | বাংলার চোখ

কক্সবাজার সৈকতে প্রতিমা বিসর্জনে লাখো মানুষের ঢল

সারাবাংলা

প্রতিনিধি 

প্রকাশিত: ০২:১৮, ১৪ অক্টোবর ২০২৪

সর্বশেষ

কক্সবাজার সৈকতে প্রতিমা বিসর্জনে লাখো মানুষের ঢল

ছবি:সংগৃহীত

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবনী পয়েন্টে ব্যাপক জনস্রোতের মধ্য দিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গাপূজার প্রতিমা বিসর্জন সম্পন্ন হয়েছে। রোববার দুপুর ২টা থেকে শুরু হওয়া এ উৎসবের বিশেষ আয়োজন ছিল ‘বিজয়া সম্মেলন’, যা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান এবং নানা বিশিষ্ট ব্যক্তিদের বক্তব্যের মাধ্যমে সুশৃঙ্খলভাবে অনুষ্ঠিত হয়।

এটি ছিল দুর্গাপূজার সর্বশেষ পর্যায়, যেখানে পূজারিরা মা দুর্গাকে বিদায় জানানোর জন্য একত্রিত হন। এ উপলক্ষে প্রায় তিন লাখ মানুষের ঢল নামে সৈকতে।

দুপুর ২টায় কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের লাবনী পয়েন্টের উন্মুক্ত মঞ্চে শুরু হয় বিজয়া সম্মেলন। এর আয়োজন করে কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ।

এ সময় জেলার বিভিন্ন পূজামণ্ডপ থেকে একের পর এক প্রতিমা ট্রাকযোগে আনা শুরু হয়। পুরো কক্সবাজার জেলা এবং আশপাশের এলাকার অর্ধশতাধিক মণ্ডপ থেকে প্রতিমাগুলো এসে জমা হয় লাবনী পয়েন্টে। প্রতিমাগুলোকে মঞ্চের চারপাশে বালিয়াড়িতে একে একে সাজানো হয়।

অনুষ্ঠানস্থলে হাজার হাজার পূজারি, স্থানীয় বাসিন্দা এবং পর্যটকের ভিড়ে সৈকতটি তখন ভরে ওঠে।

বিকাল সাড়ে ৩টার মধ্যে পুরো কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত হয়ে ওঠে জনসমাগমের স্থান। প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে সৈকতের উত্তরের শৈবাল, কবিতা চত্বর পয়েন্ট এবং উত্তরের সি গাল, সুগন্ধা থেকে কলাতলী পয়েন্ট পর্যন্ত জনতার ঢল নামে।

স্থানীয় প্রশাসন এবং আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ৩ লাখেরও বেশি মানুষ এ অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এ সময়ে পর্যটকরাও এই উৎসবের সাক্ষী হয়। বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে সমুদ্রের ঢেউতে প্রতিমাগুলো বিসর্জন দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়।

বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে লাবনী পয়েন্টের উন্মুক্ত মঞ্চে জড়ো হওয়া হাজার হাজার মানুষ একযোগে ‘মা দুর্গা কি জয়’ স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে। এর পরেই শুরু হয় প্রতিমাগুলোর বিসর্জন। একে একে প্রতিমাগুলোকে সমুদ্রের ঢেউয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় এবং বিসর্জন দেওয়া হয়। সৈকতের ঢেউয়ে যখন প্রতিমাগুলো ভাসতে শুরু করে, তখন দর্শনার্থী, পূজারি ও আয়োজকদের মধ্যে একধরনের আবেগঘন পরিবেশ বিরাজ করছিল।

কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি উদয় শংকর পাল মিঠু এ বিশাল আয়োজনে অংশ নেওয়া মানুষদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ৩ লাখেরও বেশি মানুষের উপস্থিতিতে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে দেশের সর্ববৃহৎ প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠানটি শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এতে ৫০টিরও বেশি প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়।

তিনি আরও জানান, কক্সবাজার ছাড়াও জেলার রামুর বাঁকখাল নদী, চকরিয়ার মাতামুহুরী নদী, টেকনাফের সাগর ও নাফ নদী, উখিয়ার ইনানী সৈকত এবং রেজুনদীতে প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

বিজয়া সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ সালাহ উদ্দিন। যিনি প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানটির উদ্বোধন করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন র‌্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচএম সাজ্জাদ হোসেন, কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ, কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের এসপি মাহফুজুল ইসলাম, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফুর রহমান কাজল, জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক শামীম আরা স্বপ্না, সাবেক পৌর মেয়র সরওয়ার কামাল, এবি পার্টির জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম ফারুক কায়সার এবং জামায়াত নেতা শহীদুল আলম বাহাদুরসহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়